মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫

কুসুম্বা মসজিদের ছবি অপসারণে ক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক

 

মহসিন রেজা 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন পাঁচ টাকার নোটে ঐতিহাসিক কুসুম্বা শাহী মসজিদের ছবি অপসারণের খবরে নওগাঁর মান্দা উপজেলাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাঁচ টাকার নোটে সংযুক্ত থাকা এ মসজিদের ছবি অনেকের কাছে এলাকার ঐতিহ্য ও গর্বের প্রতীক ছিল। ফলে নতুন নোটে মসজিদের ছবি না থাকার বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে এটিকে এলাকার সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্বীকৃতির ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন। অনেকেই দুঃখ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘কুসুম্বা মসজিদের ছবি আমাদের অহংকার ছিল। এটি মুছে ফেলা মানে ইতিহাসকে অবজ্ঞা করা।’

এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন আগামীকাল মঙ্গলবার মান্দায় বিক্ষোভসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তারা মসজিদের ছবি পুনঃস্থাপনের দাবি জানিয়েছে এবং প্রয়োজনে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছে।

জানতে চাইলে মান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. ইকরামুল বারী টিপু বলেন, ‘কুসুম্বা মসজিদ ঐতিহ্যবাহী মুসলিম স্থাপত্যের এক অনন্য নিদর্শন। প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মসজিদটি উত্তরাঞ্চলের মাটি ও মানুষের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পাঁচ টাকার নোট থেকে এ মসজিদের ছবি যেন মুছে ফেলা না হয় এ অঞ্চলের মানুষের এমনটি দাবি।’

উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম বাবুল চৌধুরী বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মসজিদের ছবি নোট থেকে সরানো মান্দাবাসীর প্রতি চরম অবমূল্যায়ন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং দ্রুত পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এনিয়ে আগামিকাল মঙ্গলবার দলীয়ভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রামবাংলা সাহিত্য পত্রিকার সম্পাদক আশরাফুল হক পলাশ  বলেন, ‘কুসুম্বা মসজিদ নিয়ে আমি অনেক গবেষনা করেছি। এ বিষয়ে আমার সম্পাদনায় একাধিক বইও প্রকাশিত হয়েছে। কুসুম্বা মসজিদ শুধু স্থাপত্য নিদর্শন নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক পরিচয় বহন করে। নতুন নোটে তা না থাকায় হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে।’

প্রসঙ্গত, কুসুম্বা শাহী মসজিদ মান্দা উপজেলার ঐতিহাসিক একটি স্থাপত্য নিদর্শন, যা মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছিল এবং বর্তমানে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত তালিকায় রয়েছে।


শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: