সোমবার, ৩ মার্চ, ২০২৫

গাইবান্ধায় পবিত্র রমজানে বেড়েছে লেবু, শসা ও বেগুনের দাম।


মো: শুভ ইসলাম,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে চলছে রোজাদারদের প্রস্ততি। এদিকে বাজারের কেনাকাটা সেরে নিতে ব্যস্ত লোকজন। সব কিছুর বাজার ঠিকঠাক থাকলেও বেড়েছে লেবু, শসা, বেগুন, ছোলা ও সোয়াবিন তলল এর দাম।

এছাড়াও, চিনি, বেসনের মতো পণ্যের দামও বেড়েছে। তবে ভোক্তাদের রোজার মাসে ভোজ্য তেল নিয়েও সঙ্কট কাটেনি।

প্রত্যেক রোজাদার ইফতারীর সময় লেবুর শরবত না খেলেই নয়। তাই রমজান এলে লেবুর দামও বাড়তে থাকে। গেল এক সপ্তাহে ৬০০-৭০০ টাকায় পাওয়া যেত ১০০ লেবু। এখন সেই লেবু ৯০০-১০০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের । গত ১৫ দিন আগে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এখন সেই লেবুর হালি ৩৮থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাউন্সিলর বাজারে লেবু বিক্রেতা খুশি মিয়া বলেন, রোজা শুরু হওয়ার কারণে হঠাৎ বাজারে লেবুর চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় লেবুর সরবরাহ হচ্ছে না। স্থানীয় বাগানে কেবল মুকুল ধরেছে, তাই সরবারহ কম এ কারণে দাম বেড়েছে। গাছে সব কড়া (মুকুল) বড় লেবু নাই। তবে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে কিছুটা সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

একই বাজারের লেবু বিক্রেতা সাদা মিয়া বলেন, আকাশের বৃষ্টি নাই, গাছে মুকুল কম। চৈত্র-বৈশাখ মাসে বাজারে প্রচুর সরবারহ হবে, তখন এই সংকট কেটে যাবে দামও কমবে। তিনি বলেন, লেবুর ভাল ফলন হলেও প্রতি বছরে রোজার মাসে লেবুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে একটু দাম বেড়ে যায়। 

তবে খেজুর, ছোলা, মুড়ি, গুড় এসব পণ্যের দাম এখনো বাড়েনি। আগের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে এসব পণ্যের।

গাইবান্ধা উপজেলার বড় বাজার, দারিয়াপুর , কামার জানি , কাউন্সিলর বাজার , তালতলা , রুপার বাজার , এগুলো বাজার ঘুরে বাজারের এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও এলাচি লেবুর হালি ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। এখন সেই লেবু ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলা শহরের বড় বাজারে শরবতি লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হালি বাতাবি লেবু ৪৫-৫০ টাকা দাম হাঁকছে দোকানদাররা।


বিক্রেতারা বলছেন, রোজার কারণে হঠাৎ বাজারে লেবুর চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় লেবুর সরবরাহ বাড়ছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। এখন গাছে ফুল আসছে, কিছুদিনের মধ্যে ফলও আসবে। অবশ্য এটা লেবুর মৌসুম নয়।

 ইফতারীর আরেকটি অনুসঙ্গ হলো বেগুন ও শসা।  গাইবান্ধা সদর পুরাতন বাজারে  ঘুরে দেখা গেছে, প্রকারভেদে গোল বেগুন প্রতি কেজি পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ টাকা কেজিতে।

ওই বাজারের শসা বিক্রেতা আরাফাত আলী জিম ও মো. সাকিব আল হাসান বলেন, রোজার মাসে শসা ও বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতি কেজি দেশি শসাতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে হাইব্রিট শসা ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিন আগে বেগুন ও শসা কেজিতে ৮-১০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছিল।

তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে খেজুর, ছোলার দাম। কিন্ত গত বছর রোজার মাসে খেজুর, ছোলার দাম প্রচুর বেড়েছিল। তবে এবার একটু ব্যতিক্রম। এ বছর রমজানের আগে সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক-কর কমিয়েছে বলে বেড়েছে আমদানি।

জেলা শহরের বড় বাজারের খেজুর ব্যবসায়ী ইমরান হাক্কানী জানান, গত এক মাসে প্রকারভেদে কেজিতে খেজুরের দাম কমেছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত। তিনি বলেন, বর্তমানে প্রতি কেজি জায়েদি খেজুর ২২০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া সাধারণ মানের খেজুর ১১০০-১২০০ টাকা, আজওয়া ৫০০-৫৬০ টাকা ও মেডজুল ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: